কক্সবাজারের টেকনাফে অপহরণের শিকার ১৮ বনকর্মীকে উদ্ধার করা হয়েছে। র্যাব, পুলিশ, এপিবিএনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের মুখে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন।
উদ্ধার হাওয়া বনকর্মীরা হলেন- ফরেস্টার সাইফুল ইসলাম (২২), সৈয়দ (৫০), রফিক, আইয়ুব খান (১৮), আইয়ুব আলী (৫০), আনসার উল্ল্যাহ (১৮), আয়াত উল্লাহ (২২), সামছু (৪৫), ইসলাম (২১), সামছু (৪০), ইসমাইল (৩৫), মোহাম্মদ হাসিম (৪০), নূর মোহাম্মদ (২১), সৈয়দ আমিন (৩০), সফি উল্লাহ (৩০), আইয়ুব (৫০), মাহাতা আমিন (১৮)। আরও দুজনের নাম পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে অনেকে রোহিঙ্গা আছেন বলে জানা গেছে।
র্যাব-১৫–এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. কামরুজ্জামান ও টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, সোমবার সকাল ১০টার দিকে জাদিমোরা পাহাড়ে বনে বন বিভাগের হয়ে গাছের চারা রোপণের কাজ করার সময় অস্ত্রের মুখে শ্রমিকদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অপহরণের শিকার শ্রমিকদের পরিবারের কাছে জনপ্রতি এক লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পরে তাদের উদ্ধারে মঙ্গলবার সকাল থেকে হ্নীলার জাদিমোরা পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
বন বিভাগের টেকনাফের রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুর রশিদ বলেন, বন বিভাগের হয়ে কাজে নিয়োজিত ছিলেন ওই শ্রমিকেরা। অপহরণের খবর পেয়ে পুলিশ, এপিবিএন, র্যাব, বন বিভাগের কর্মী ও স্থানীয় লোকজন পাহাড়ে অভিযান শুরু করে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তথ্য বলছে, গত এক বছরের বেশি সময়ে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৫৩ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। তাদের মধ্যে ৯৪ জন স্থানীয় বাসিন্দা, ৫৯ জন রোহিঙ্গা নাগরিক। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৭৮ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে গতকাল টেকনাফের জাদিমুড়া এলাকায় পাহাড়ি এলাকা থেকে অস্ত্রধারীরা ১৯ বনকর্মীকে অপহরণ করে। অপহরণের পর থেকে মুক্তিপণ হিসেবে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে ফোন করে জনপ্রতি এক লাখ টাকা করে মোট ১৯ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এ অপহরণের ঘটনায় টেকনাফ উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই মঙ্গলবার সকালে টেকনাফের হোয়াইক্ষ্যং-শামলাপুর সড়কে সড়ক অবরোধ করে আরও ৭ কৃষকে অস্ত্রের মুখে অপহরণের খবর পাওয়া গেছে।